যুব সমাজকে মানব সম্পদে রুপান্তর করাই আমাদরে লক্ষ্য
- মারুপ মোঃ জহরিুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা পরচিালক
ওশনে মরেটিাইম একাডমেী
পৃথিবী হচ্ছে সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ যার বিশাল অংশের দুই তৃতীয়াংশ জুড়ে আছে নীল জলরাশি। এর শতকরা ৯৭.৫০ ভাগ হচ্ছে লোনা জল। পৃথিবীর প্রাণীকুলের প্রায় ৯৮ ভাগের আবাস এই জলে । মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে মহাকাশের অনেক বিষয়ে সফল ভাবে অনেকদূরে অগ্রসর হলেও সাগরের তলদেশের অনেক কিছুই এখনো ও অজানা রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা এ যাবৎ সমুদ্রের জীব বৈচিত্রোর মাত্র দুই তৃতীয়াংশের তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করতে পেরেছে। অদুর ভবিষ্যতে এ টি হবে মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রধান ক্ষেত্র।
মহাসাগরে শিপিং কোম্পানীগুলো বিশ্ব বাণিজ্য পরিবহনের শতকরা ৮০ ভাগ সম্পন্ন করে। বাস্তবিক পক্ষে সারা বিশ্বে আমরা যা তৈরি করি, যা ব্যবহার করি এবং যা ভোগ করি সব কিছু সমুদ্র বাণিজ্য পরিবহনের অংশ। যে বস্ত্র আমরা পরিধান করি, যে গাড়ি আমরা চালাই, যে জ্বালানী আমরা ব্যবহার করি, যে টেলিভিশন আমরা দেখি যে খাদ্য আমরা খাই, যে কম্পিউটার আমরা ব্যবহার করি, যে সেলফোন আমরা হাতে রাখি হতে পারে তা চীন, জাপান, জার্মানী, যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কিংবা ব্রাজিল থেকে আমদানি করা কিন্তু আমরা কি কখনোও চিন্তা করি সমুদ্রের বিশাল বিশাল জাহাজ গুলো খুব দ্রুত ও নিরাপদে পণ্যসামগ্রী আমাদের মাঝে পৌছে দেয়, কারা ঐ জাহাজগুলোর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে থাকে ? কিংবা আমরা কি জানার চেষ্টা করেছি কোন দেশের অথবা কোন ধরনের নাবিক খুবই জনপ্রিয় এবং কোন ধরনের মেরিটাইম প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণের মাধমে এই নাবিক তৈরি করে? হ্যাঁ এই সম্পর্কিত সব গুলো বিষয় চিন্তা করে বিশ্বমানের নাবিক হিসেবে ক্যাডেট এবং রেটিংদের নিরলসভাবে পাঠদান ও প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে আমর দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে চলেছি। ওশেন মেরিটাইম একাডেমী তার কার্যক্রম ২০১২ সালে সমুদ্রের সন্নিকটে সবুজ ঘেরা অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ শুরু করে। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন নিয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রলয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠানীক অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে অধ্যাবধি এখান থেকে প্রায় ৪০০ ক্যাডেট ও রেটিং পাসড আউট হয় এবং অসংখ্য মেরিনারদের এখানে স্বল্প মেয়াদী কোর্সের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তারা বর্তমানে অত্যন্ত সুনামের সাথে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যয়ের বিভিন্ন জাহাজে কর্মরত রয়েছেন। এখানে একাডেমী ক্যাডেটদের পাঠদানের জন্য রয়েছে সুসজ্জিত এবং প্রতিটি কক্ষ রয়েছে আধনিক মানের প্রজেক্টর, ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য রয়েছে আইটি ল্যাব, ইঞ্জিন ক্যাডেটদের জন্য রয়েছে Marine workshop, Engineering Drawing Room ; Nautical Cadet দের জন্য রয়েছে Navigation Simulator Chart Room Module Room. ক্যাডেট এবং রেটিংসদের থাকার জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ পৃথক ৩টি আবাসিক হল, বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য রয়েছে আলাদা রিক্রিয়েশন রুম, স্পোটস রুম, ফুটবল মাঠ, ভলিবল মাঠ, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি।
আমাদের কথা ঃ Ocean Maritime Academy (OMA) নামক খুবই নামকরা মেরিন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব হয়েছিল ২০১২ সালে একজন তারুণ্যদীপ্ত উদ্যেগী, দক্ষ ও আত্মপ্রত্যয়ী উদ্যেক্তার হাত ধরে , যার নাম Engr,Maruf Muhammad Jahirul Islam তীব্র প্রতিযোগীতা পূর্ণ চাকুরির বাজারে কর্মসংস্থান অপ্রতুল,আর এর বিরুপ প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি মুখে পড়েছে। কিন্তু উক্ত প্রতিষ্টানের কান্ডারী তার হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করেছেন এই অবস্থার পরিবর্তন হবে এবং তিনি ইতিমধ্যে তার প্রমান ও দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে অদ্যাবধি এর উদ্যোক্তা ক্রমাগত ওশেন মেরিটাইম একাডেমীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের এবং সমগ্র মেরিন সেক্টরের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। এখন তাঁর সেবার পরিধি বাংলাদেশে , চীন সহ বিভিন্ন দেশে বেড়েই চলেছে। অদূর ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানের বস্তুগপ্ত এবং গুণগত সেবার পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
ভিশন : মেরিটাইম সেক্টরে মোট গুণগত মানের ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করণের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন।
মিশন : Ocean Maritime Academy (OMA) এর লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের গুনগতমানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তাদের সামগ্রিক বুদ্ধিমত্তা নৈতিকতাবোধ, ভালো আচারণ সামাজিক মূল্যবোধ , দেশপ্রম, দেশে ও বিদেশে যোগ্য Seafarer তৈরী করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা; যাতে তারা নিচের, পরিবারের ও দেশের সামগ্রিক অর্ধনীতিতে ভালোভাবে অবদা রাাখতে পারে।
একজন মেরিনার হিসেবে পেশা গঠনে Ocean Maritime Academy কেন পছন্দ?
ক্যাডেট প্রশিক্ষণের সময়োপযোগী চুক্তি ও কার্যক্রম : ক্যাডেট প্রশিক্ষণের জন্য ১ম বছর Ocean Maritime Academy চট্রগ্রামে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ ; ২য় বছর চায়নায় Fujian Chuanzheng Communication College (সরকারী কলেজ ) এ প্রশিক্ষণ এবং তৃতীয় বছর Chi Ocean International Shipping Ltd. এর তত্ত্বাবধানে জাহাজে চাকরির ব্যবস্থা।
শিক্ষার পাশাপাশি Ocean Maritime Academy শিক্ষার্থীদের দিয়েছে সুশৃঙ্খল জীবন ও নিয়মানুবর্তিতা । তারা শরীর চর্চার মাধ্যমে দিন করেন। প্রাত:রাপশের পর শুরু হয় প্যারেডের আনুষ্ঠানিকতা । প্যারেড গ্রাউন্ডে শিক্ষার্থীদের দীপ্ত ভঙ্গিমার মাঝে আগামী দিনের সৎ , যোগ্য, আÍপ্রত্যয়ী ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নাবিক হওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট। তারা তাদের সময় অতিবাহিত করেন কঠোর নিয়মতান্ত্রিক তার মধ্য দিয়ে । অতএব , তাদের আহার ,নিদ্রা, শিক্ষা, খেলাধুলা ও বিনোদন সবাই যেন একটি সুশৃঙ্খল আনুষ্ঠানিকতা।
বিশ্বায়নের এই যুগে শুধু মাত্র গতানুগতিক জ্ঞান ও দক্ষতা নিয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় সফল হওয়া কঠিন, তার জন্য চাই নিজেদের সফল প্রস্তুতি আর তাই Ocean Maritime Academy তার সকল শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের মেরিনার তৈরির পাশাপাশি তাদের উন্নত চরিত্র , দেশপ্রেম , উন্নত আচারণ, ইতিবাচক মনোভাব ও ব্যক্তিত্ব সৃষ্টিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে , যাতে তারা তাদেও পরিবারকে এবং সর্বোপরী জাতিকে আলোকিত করাতে পারে ।
বর্তমানে Ocean Maritime Academy এর কর্মব্যপ্তি বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের আরও উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে , প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক চুক্তি সম্পাদন করেছে ।
Ocean Maritime Academy আনুমানিক ১০,০০০ শতাংশ জায়গার উপর অতি অল্প সময়ে এর স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি করতে যাচ্ছে , এর জন্য সম্বাব্য ২টি এলাকা নির্ধারিত করা হয়েছে। উক্ত ক্যাম্পাসে বিশ্ব মানের আধুনিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সকল ব্যবস্থা থাকবে। ক্যাম্পাসকে ২টি ভাগে বিভক্ত করা হবে, আবাসিক ব্লক ও প্রশাসনিক ব্লক , এখানে একাধিক হল ও প্রশাসনিক ভবন থাকবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ষ্টাফদের জন্যে ও থাকবে ডরমিটরীসহ অতি উন্নত জীবন ব্যবস্থা ।
প্রতিটি ভবনই বিশ্বমানের স্থাপত্য নকশা (Architectural Design) ও গঠনিক নকশা (Structural Design ) সহ LEED ( Leadership in Energy & Environ- mental Design) আদলে তৈরি করা হবে। বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের প্রায় ৫৮০ কিলোমিটার উপকূল রেখার নিকটবর্তী অঞ্চল সমূহের এবং পদ্মা, মেঘনা, ও যমুনার পাহাড়ে জনজীবনের আর্থিক ও জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তনের জন্য তাদের সন্তানদের সহজ ও সহনীয় খরচে নাবিক তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে । অদূর ভবিষ্যতে তা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে ।